ইসলামের ইতিহাসে অনেক মেয়েদের ইসলামিক নাম ছিল যারা ইসলাম প্রচারে অনেক গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করেছে। এরমধ্যে, কিছু আল্লাহর পছন্দের মেয়েদের নাম ছিল যারা ইসলামের ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপুর্ন ও মর্যাদাবান মহিলা ছিল। যেমন; একটি নাম হলো মরিয়ম বা মারিয়াম। মরিয়ম (আ:) হলো এমন একজন মহিলা যার নাম আল্লাহ নিজেই সরাসরি কোরআনে সূরার নাম দিয়ে উল্লেখ করেছেন। এই ছাড়াও আল্লাহর কাছে মেয়েদের প্রিয় নাম গুলো হলো: ফাতিমা, মরিয়ম, আয়েশা, খাদিজা, আসিয়াহ, জয়নাব, হাফসা, সুমাইয়া।
আল্লাহর কাছে এই নাম গুলো অনেক প্রিয় নাম, বিশেষ করে ইসলামের ইতিহাসে মরিয়ম, আসিয়াহ, আয়েশা, ফাতিমা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ইসলামের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে যার কারণে তাদের নাম গুলো আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়।
Table of Contents
আল্লাহর পছন্দের মেয়েদের নাম
নিচে আল্লাহর পছন্দের মেয়েদের নাম ও তাদের অর্থ রয়েছে;
- মরিয়ম (Maryam)
- ফাতিমা (Fatima)
- আয়েশা (Ayesha)
- খাদিজা (Khadija)
- আসিয়াহ (Asiya)
- জয়নব (Zainab)
- হাফসা (Hafsa)
- সুমাইয়া (Sumaiya)
আল্লাহর কাছে এই নাম গুলো অধিক প্রিয় নাম। নিচে নাম গুলো সম্পর্কে এবং যে কারণে আল্লাহর কাছে এই নাম গুলো প্রিয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন: মেয়েদের ইসলামিক নাম
০১
মরিয়মআরবী | مريم |
ইংরেজি | Maryam |
অর্থ | পবিত্র, পরিশুদ্ধ |
বিবরণ: মরিয়ম (আঃ) ছিলেন এমন একজন বিশেষ নারী যার নামে কুরআনে একটি সূরা রয়েছে। কুরআনে তাঁর নামে একটি সম্পূর্ণ সূরা (সূরা মারইয়াম) রয়েছে। তিনি ঈসা (আঃ)-এর মা এবং ইসলামের দৃষ্টিতে একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ নাম। |
০২
ফাতিমাআরবী | فاطمة |
ইংরেজি | Fatima |
অর্থ | দুধ ছাড়ানো বা ত্যাগী |
বিবরণ: ফাতিমা (রা.) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যা। তিনি অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ, চরিত্রবান এবং মুমিন নারীদের আদর্শ হিসেবে বিবেচিত। ফাতিমা / ফাতিমাহ নামের অর্থ হলো যিনি পৃথক করেন বা যিনি বিরত থাকেন। দুধ ছাড়ানো বা ত্যাগী এটিকেও বুঝায়। |
০৩
আয়েশাআরবী | عائشة |
ইংরেজি | Ayesha |
অর্থ | জীবন্ত, সমৃদ্ধ জীবন |
বিবরণ: আয়েশা (রা.) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একজন প্রিয় স্ত্রী এবং সেই সাথে তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট ইসলামিক পণ্ডিত। আয়েশা (রা.) ইসলামের ইতিহাসে হাদিস সংরক্ষণ ও প্রচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যার কারণে তার নামকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে। |
০৪
খাদিজাআরবী | خديجة |
ইংরেজি | Khadija |
অর্থ | আগেই জন্মগ্রহণকারী |
বিবরণ: খাদিজা (রা.) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী, শুধু তাই না বিয়ে করার আহে থেকেও তিনি ছিলেন একজন দক্ষ ব্যবসায়ী। হজরত খাদিজা (রা.) ছিলেন একজন বিচক্ষণ নারী। তিনি রাসূল (সা.)-এর নবুওয়াতের সময় অত্যন্ত সহায়ক এবং গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছিলেন, যার কারণে তার নামকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে। |
০৫
আসিয়াহআরবী | آسية |
ইংরেজি | Asiya |
অর্থ | আরাম দানকারী, ধৈর্যশীল |
বিবরণ: আসিয়াহ ছিলেন ফেরাউনের স্ত্রী এবং কুরআনে তাঁর নামকে উচ্চতর ঈমান ও ধৈর্যের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন আলেমদের মতে তিনি গোপনে আল্লাহর ইবাদত করতেন এবং তার ধর্ম তার স্বামীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন। এক পর্যায়ে তা প্রকাশ হলে ফেরাউন তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া। |
০৬
জয়নবআরবী | زينب |
ইংরেজি | Zainab |
অর্থ | সুন্দর গাছ, অলঙ্কার |
বিবরণ: জয়নব (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যা ছিলেন। তিনি তাঁর ধৈর্য, সাহসিকতা এবং পরিবারপ্রেমের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। জয়নব (রা.) রাসূল (সা.)-এর প্রথম কন্যা এবং পরিবারে প্রথম সন্তান। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াতের প্রথম দিকেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করে। কুরাইশদের অত্যাচারে তিনি আহত হন এবং সেই আঘাতের কারণে পরবর্তীতে জয়নব (রা.) ইন্তেকাল করেন। |
০৭
হাফসাআরবী | حفصة |
ইংরেজি | Hafsa |
অর্থ | ছোট সিংহী |
বিবরণ: হাফসা (রাঃ.) রাসূলুল্লাহ (সাঃ.)-এর স্ত্রী ছিলেন। তাকে ৪০০ দিরহাম মোহরানা দেওয়া হয়েছিল। তখন তার বয়স ছিল ২০ বছরেরও কম. কুরআনের প্রথম সংকলন সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি রোজা রাখা অবস্থায় মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তথ্যসূত্র: প্রথম আলো। |
০৮
সুমাইয়াআরবী | سمية |
ইংরেজি | Sumaiya |
অর্থ | উচ্চ মর্যাদা |
বিবরণ: সুমাইয়া (রা.) ইসলামের ইতিহাসে সর্বপ্রথম শাহাদাত বরণ করেন। তিনি সবার কাছে প্রিয় ছিল উম্মে আম্মার নামেই। তিনি এবং তাঁর পরিবার ইসলামের প্রতি বিশ্বাসের কারণে অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন। তার পরিবার অসহায় ও দারিদ্র্যপীড়িত হওয়ার কারণে তাদের কুরাইশ নেতাদের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। তথ্যসূত্র: দেশ রুপান্তর। |
শেষ কথা
এই পোস্টে আল্লাহর পছন্দের মেয়েদের নাম গুলো দেওয়া হলো। ইসলামের ইতিহাসে কয়েকজন মহিলা ছিল যারা আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয় হয়ে উঠে তাদের কার্যক্রমের কারণে। যেমন; আসিয়া ছিল ফেরাউনের স্ত্রী এর পর ও তিনি আল্লাহকে বিশ্বাস করেছে এবং গোপনে আল্লাহর ইবাদত করেছে, যার কারণে তাকে অনেক অত্যাচার পর্যন্ত সহ্য করতে হয়েছে। এভাবে, সুমাইয়া (রা.) এবং তার পরিবার ইসলামের প্রতি বিশ্বাস আনার কারণে তাদের অত্যাচারের শিকার হতে হয়। এভাবে আল্লাহর কাছে তাদের নাম গুলো প্রিয় হয়ে যায়। আপনি চাইলে কোরআন থেকে মেয়েদের নাম গুলো জেনে নিতে পারেন।